আজ শুক্রবার, ১৪ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আওয়ামীলীগের হাফ ডজন নেতার চ্যালেঞ্জের মুখে সেলিম ওসমান!

সেলিম ওসমান

সেলিম ওসমান

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে জমে উঠেছে মনোনয়ন লড়াই। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ওসমান পরিবারের প্রভাবশালী সদস্য ও জাতীয় পার্টি থেকে মনোনীত সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মাঠে সক্রিয় রয়েছে আওয়ামীলীগের হাফ ডজন প্রার্থী। এর মধ্যে ওসমান পরিবারের এক সময়ের ঘনিষ্ঠ দুই মিত্রও রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে  দলটির জেলা মহানগরের শীর্ষ নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের বক্তব্যে তারা স্পষ্ট করে বলেছেন  কোন অবস্থাতেই তারা এই আসন থেকে অন্য কোন দলের প্রার্থী চান না।
এরই মাঝে মনোনয়ন নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিযোগিতা। এই আসনে বর্তমানে আওয়ামীলীগের প্রায় হাফ ডজন নেতা সক্রিয় রয়েছেন। তারা ইতিমধ্যে দলের মনোনয়ন চাইবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আর জাতীয় পর্যায়েও সব কিছু নির্বাচনমুখী হচ্ছে।
বিএনপির আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে। তাই অনেকের মতে এখন পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে আগামী নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ। তাই আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্য দলের প্রার্থী হলে এই আসটি আওয়ামীলীগের হাত ছাড়া হবে  এমনটাই মনে করছেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। তাই তারা নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন সহ নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসন থেকেই আওয়ামীলীগের প্রার্থীর জন্য জোড় দাবি জানিয়ে আসছে।

এই আসনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক এমপি এসএম আকরাম, আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও জেলা যুবলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কাদির, জেলা আওয়ামীলীগের আরেক সহ সভাপতি আরজু রহমান ভূইয়া, আওয়ামীলীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ বারের সাবেক সভাপতি এডভোকেট আনিছুর রহমান দীপু এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট খোকন সাহা ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত।
এদের মধ্যে সাবেক এমপি এসএম আকরাম ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যদি তাকে ডাকেন তিনি অবশ্যই আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত আছেন অন্যদিকে, আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে আবদুল কাদিরের বড় নির্বাচন ফেস করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর আগে তিনি উপজেলা নির্বাচন করে বিপুল পরিমান ভোট পেয়েছেন। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মতে সেই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী তিনজন না হয়ে দুইজন হলেও আবদুল কাদির পাশ করতেন। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভীর নির্বাচনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই এই দলের প্রার্থী হিসাবে তিনি একজন হেভিওয়েট প্রার্থী হিসাবে বিবেচিত হচ্ছেন।
এদিকে আওয়ামীলীগের অপর প্রার্থী আরজু রহমান ভূইয়া এখন নিয়মিত মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি একের পর এক উঠান বৈঠক করছেন এবং নির্বাচন করার জন্য সক্রিয় রয়েছেন।
আওয়ামীলীগের অপর দুই নেতা এডভোকেট আনিছুর রহমান দীপু এবং এডভোকেট খোকন সাহাও এবার মনোনয়ন চাইবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
এক সময়ের ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ দুই মিত্রের সঙ্গে বর্তমানে ওসমান পরিবারের দূরত্ব চলছে। তবে শামীম ওসমান সদ্য অনুষ্ঠিত আইনজীবিদের নির্বাচনে বলেছিলেন যে তাদের মধ্যে যে দূরত্ব বলা হচ্ছে আসলে তা ‘কৌশল’। তবে বিভিন্ন সভা সমাবেশে দীপু আর খোকন সাহা স্পষ্টভাবেই বলছেন তারা আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চাইবেন।
মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাতও এবার নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তবে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন এদের মাঝে যারাই মনোনয়ন পান না কেন নির্বাচনের মাঠ এবার তারা কোন অবস্থাতেই ছাড়বেন না। ওসমান পরিবারকে যে তারা ছেড়ে কথা বলছেন না তার আলামত এরই মাঝে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, জাতীয় পাটি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েও জাতীয় পার্টিও নেতাকর্মীদের সাথে সেলিম ওসমানের তেমন সখ্যতা নেই। এছাড়া জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয় নেই। তাই জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরাও সেলিম ওসমানের বিকল্প খুঁজছেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ